লিভারের সমস্যা হলে কি করবেন

লিভারের সমস্যা হলে কি করবেন
লিভারের সমস্যা না হলে আমাদের লিভারকে নিয়ে টনক নরে না, অবহেলা করি ৷যারা মদ্যপান করেন তাদের বেশিরভাগ- অঢেল মদ্যপানের সঙ্গে চলে লিভার ভালো রাখার ওষুধ খাওয়া৷ মাঝ বয়সের পর তো বিশেষ করে উদ্দেশ্য, মদ্যপানজনীত লিভার ড্যামেজকে সামলে রাখা কিন্ত্ত সামলে থাকে না! বিজ্ঞানীদের মতে, থাকার স্বপক্ষে এখনও কোনও বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা নেই৷ বস্ত্তত, লিভার ভালো রাখার কোনও ওষুধই নেই৷ স্বাভাবিক  প্রশ্ন আসবে, সে কি! এই যে বাজারে এতো লিভারের ওষুধ, তাদের ভূমিকা কী? যাঁরা খাচ্ছেন, সবাই কি বোকা?
লিভার ভালো করার ওষুধ, প্ল্যাসিবো এফেক্ট :-
যা খাবে তৃপ্তি করে খাবে, বলতেন ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়। কারন পেটের সঙ্গে মনের যোগ- বড় যোগ। লিভার আমাদের শরীরের শক্তিশালী অঙ্গ চট করে খারাপ হয়েছে বোঝা মুশকিল। লিভার সুস্থ রাখতে বাজার চলতি অনেক ওষুধ মেলে কিন্তু এই সব ওষুধের  প্ল্যাসিবো এফেক্ট আছে তবুও মনের বিস্বাসে খাই আর ভাবি সুস্থ হয়ে যাব। তার রেশ ছড়িয়ে পড়ে শরীরে৷ আর কে না জানে, শরীর সুস্থ রাখতে,বিশেষ করে পেটের যে কোনও সমস্যায় মনের ভূমিকা অসীম৷

সরবিলিনঃ এই ওষুধ বাওয়েল মুভ করতে সাহায্য করে৷ অ্যাকিউট হেপাটাইটিসে শরীর আইঢাই, এই ওষুধে পেট পরিষ্কার হয়ে কষ্ট কমে ল্যাকটুলোজ জাতীয় স্টুল সফটনার দিলেও এই একই কাজ হবে৷ কাজেই ওষুধের চক্করে সময় নষ্ট না করে, লিভার যাতে সত্যিই ভালো থাকে তার ব্যবস্থা করুন৷
মদ্যপানে বিরতি :- নিয়মিত মদ্যপায়ীদের মধ্যে ২০ শতাংশের লিভার খারাপ হয় উল্টো দিকে, লিভার খারাপ হওয়া মানুষের মধ্যে শতকরা প্রায় ৮০ জনের ক্ষেত্রেই কারণ মদ্যপান৷ কারোর গলা অবধি খেয়েও কিছু হয় না, কারোর দু-এক পেগেই সমস্যা অতএব মদ্যপান ত্যাগ করাই শ্রেয় আর যদি একান্তই নেশা না ছাড়তে পারেন, বছরে এক-আধবার লিভার ফাংশন টেস্ট করিয়ে দেখুন সব ঠিকঠাক আছে কিনা তবে হ্যাঁ, মদ্যপানের সঙ্গে চাটের যুগলবন্দিতে বা এমনিও যদি ওজন বাড়িয়ে ফেলেন সেক্ষেত্রে লিভারের হাত ধরে আসতে পারে অন্য বিপদও৷
ওবেসিটি, লিভার অন্যান্য :-
ওজন খুব বাড়লেই লিভারে ফ্যাট জমে যাকে ফ্যাটি লিভার বলে লিভারের এই রোগটা ভালো নয় উপযুক্ত সময় ব্যবস্থা না নিলে, হিসেব বলছে এই সব মানুষদের মধ্যে অধিকাংশই মারা যান স্ট্রোক, হার্টঅ্যাটাক বা ক্যান্সারে৷ লিভার নষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার ঝুকিও আসে তবে পরে৷ কারণ, ফ্যাটি লিভারের তলায় লুকিয়ে থাকে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, ডায়াবিটিস, হাইকোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইড  হাইপ্রেশাররের বীজ যাদের একযোগে মেটাবলিক সিনড্রোম বলে তাই সময়ে ব্যবস্থা না নিলে পস্তাতে বেশি সময় লাগে না৷
তিনের চাবিকাঠি :-
ওবেসিটি, ফ্যাটি লিভার মেটাবলিক সিনড্রোম, তিনের চাবিকাঠি হোল লো-ক্যালোরির সুষম খাবার এক্সারসাইজ৷ দিনে অন্তত ৩০-৪০ মিনিট ঘাম ঝড়ানো ব্যায়াম করলে, সঙ্গে ভাজা-মিষ্টি-ফাস্টফুড  এবং কম তেলে রান্না করা খাবার খেলে সব কটি সমস্যাই আয়ত্তে থাকে৷ দেখা গিয়েছে যাঁরা ওষুধ খেয়ে ফ্যাটি লিভারকে  ঠিক রাখার চেষ্টা করছেন, তাঁদের চেয়ে যাঁরা ডায়েট-ব্যায়াম করেন, তাঁরা অনেক বেশি ভালো থাকেন৷
ওষুধ লিভার :-প্রচুর ওষুধ আছে যা লিভারের ক্ষতি করে ডাক্তারের পারমর্শ মতো খেলে তিনি লাভ-ক্ষতির বিচার করে ওষুধ দেন বলে সমস্যা কম হয় নিতান্ত প্রয়োজন না হলে ওষুধ খাবেন না কথায় কথায় ব্যথার ওষুধ, ভেষজ ওষুধ বা ওজন কমানোর সাপলিমেন্ট না খাওয়াই ভালো, লিভারের ক্ষতি করে
লিভারে ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে :-
এর অন্যতম শর্ত হাইজিন৷ খাবার জলের ব্যাপারে সতর্ক থাকা৷ না হলে হেপাটাইটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ অর্থাত্লিভারে বা ভাইরাসের ইনফেকশন হোলে জন্ডিস হয় বড় বয়সে হলে যা প্রায়শই যথেষ্ট ঘোরালো হয়ে ওঠে৷ হেপাটাইটিস বি ঠেকাতে বি ভাইরাসের টিকা নিয়ে নেওয়া উচিত৷ আর হেপাটাইটিস সি ঠেকাতে সতর্ক থাকা দরকার রক্তের ব্যাপারে রক্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলে ভালো ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত, যারা হেপাটাইটিস সি স্ক্রিনিং করে তবে রক্ত বাজারে ছাড়েন৷ ইনজেকশনের সিরিঞ্জও যাতে স্টেরাইল থাকে সে দিকে নজর রাখা দরকার৷ কারণ বি এবং সি হেপাটাইটিসের পাল্লায় পড়লে লিভার একেবারে নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷

No comments

Powered by Blogger.