শরীরে এই ১৩টি লক্ষণ দেখলেই বুঝবেন থাইরয়েডের সমস্যা চেপে ধরেছে

শরীরে এই ১৩টি লক্ষণ দেখলেই বুঝবেন থাইরয়েডের সমস্যা চেপে ধরেছে, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ না নিলে কিন্তু বিপদ

থাইরয়েডের সমস্যায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই অসুখকে নিয়ে সাবধান হতে হবে। থাইরয়েডের সমস্যার মধ্যে বেশিরভাগই হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত। এই রোগটিতে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত।

আসলে আমাদের গলার কাছে প্রজাপতির আকৃতির একটি গ্রন্থি রয়েছে। এই গ্রন্থি থেকে বের হয় থাইরয়েড হরমোন। শরীরে এই হরমোন বিপাকক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। কোনও কারণে এই হরমোনের মাত্রায় তারতম্য হলেই চিত্তির।

এখন প্রশ্ন হল, হাইপোথাইরয়েডিজম অসুখটি কীএই প্রসঙ্গে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানাচ্ছেথাইরয়েড গ্রন্থি থেকে যখন পর্যাপ্ত হরমোন বের হয় না, সেই অবস্থার নাম হাইপোথাইরেডিজম। এই সময়ে রক্তে অপর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন থাকে। এই কারণে বিপাক ধীর হয়ে যায়।

এই অসুখে আক্রান্তের বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই রোগের লক্ষণ চিনে প্রথমেই চিকিৎসা করান। আসুন রোগটি সম্পর্কে বিশদে জানা যাক-

কী কী লক্ষণ থাকে?​

মেয়ো ক্লিনিক জানাচ্ছেরোগটি কতদূর এগিয়েছে, এর উপর নির্ভর করেই শরীরে দেখা দেয় নানা লক্ষণ। এক্ষেত্রে এই উপসর্গগুলি থাকতে পারে-


. ক্লান্তি
. ঠান্ডা লাগা
. কোষ্ঠকাঠিন্য
. ত্বক শুষ্ক হয়ে য়ায়
. ওজন বৃদ্ধি
. মুখ ফুলে যায়
. স্বর বদলে যেতে পারে
. পেশির দুর্বলতা
. পেশিতে ব্যথা
. মেনস্ট্রুরাল সার্কেল বদলে যায়
১০. চুল পাতলা হয়
১১. ডিপ্রেশন
১২. মনে রাখতে সমস্যা
১৩. হৃদগতি ধীর হয়ে যায়।

কাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি?​

এই সমস্যা যে কারও হতে পারে। এমনকী শুধু যে মহিলাদের এই রোগ হয় বলে একটা ধারণা রয়েছে, তাও ভুল। বরং পুরুষেরও এই অসুখ হয়। তবে মহিলাদের পুরুষের তুলনায় এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি। দেখা গিয়েছে ৬০ বছরের বেশি বয়সি মহিলাদের মধ্যে এই রোগ আক্রমণ চালায়। গবেষণায় আরও নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, মেনোপজ হওয়ার পরই মহিলারা এই অসুখে বেশি আক্রান্ত হন। তাই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের এই রোগ নিয়ে সচেতন হতে হবে।

কী ভাবে রোগ নির্ণয়?​

চিকিৎসক প্রথমে রোগীর কাছ থেকে জানতে চান তাঁর লক্ষণ। সেই উপসর্গের উপর নির্ভর করে একটা অনুমান তিনি করে ফেলেন। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসক হাত দিয়েও থাইরয়েড গ্ল্যান্ড পরীক্ষা করতে পারেন। থাইরয়েড গ্রন্থি বড় হলে বোঝা যায়। এরপর দেওয়া হয় একটি রক্তপরীক্ষা। এই পরীক্ষার নাম থাইরয়েড স্টিমুলেটিং টেস্ট বা টিএসএইচ টেস্ট। এই পরীক্ষার মাধ্যমেই থাইরয়েডের লেভেল বোঝা যায়।

চিকিৎসা কী?​

এই রোগের মূল চিকিৎসা হল, শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি মিটিয়ে দেওয়া। কিছু ওষুধের মাধ্যমেই এই কাজটি করা সম্ভব। সাধারণত লেভোথাইরক্সিন জাতীয় ওষুধ রোগীকে দেওয়া হয়। এই ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমেই দেহে থাইরয়েডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। মনে রাখবেন, এই অসুখ অনায়াসে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। শুধু সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে আসলেই হল।

আয়োডিন যুক্ত খাবার খান

নুন সহ কিছু খাবারে থাকে আয়োডিন। এই আয়োডিন থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বাড়াতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে নুন ছাড়াও এইসব হাই আয়োডিনযুক্ত খাবারগুলি পাতে রাখুন-

. ডিম
. দুগ্ধজাত খাবার
. মাংস, সামুদ্রিক খাদ্য ইত্যাদি।
ওষুধের পাশাপাশি এই খাবারগুলি খেলে সুস্থ থাকা সম্ভব।
Disclaimer:
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

No comments

Powered by Blogger.