অশ্বগন্ধার ১২ টি প্রমাণিত উপকারিতা
অশ্বগন্ধার ১২টি প্রমাণিত উপকারিতা নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
২. শ্রমে ক্লান্তি দূর করতে: শরীরে তেমন কোনো রোগ নেই, হজমও হয়, দাস্ত পরিষ্কার হয়; শরীর যে খারাপ থাকে অশ্বগন্ধা হচ্ছে উইথানিয়া গণের একটি গুল্ম। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Withania
Somnifera. প্রাচীন কালে এই অশ্বগন্ধার প্রয়োগ হতো যেখানে রসবহ, রক্তবহ ও শুক্রবহ স্রোতের দোষ রয়েছে, এসসব দোষ নিরসন করে তাকে স্বাভাবিক ক্রিয়ায় নিয়ে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন।তাও নয়, অথচ তারা একটু পরিশ্রম করলেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে; তখনই ধরে নিতে হবে তার রক্তবহ স্রোতে দূর্বলতা এসেছে, অর্থাৎ অল্পেই তার হদযন্ত্রকে অধিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে; এক্ষেত্রে অনেকের দেখা যায় ধমনীর স্পন্দন দ্রুত হচ্ছে অর্থাৎ যেটা হলো চিরাচরিত প্রচলিত নাড়ী স্পন্দন। এই যে হৃদযন্ত্রের অত্যধিক চালনা হচ্ছে, এর জন্যেই সে ক্লান্তি অনুভব করছে, তাই এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ দেড় গ্রাম মাত্রা করে দু বেলা আধ বা এক কাপ গরম দুধে মিশিয়ে খেতে হবে। কয়েকদিন খাওয়ার পর ঐ মাত্রাটা আস্তে আস্তে বাড়িয়ে ৪ থেকে ৫ গ্রাম করে প্রতি বেলায় খেতে পারবেন। এইভাবে শুরু থেকে মাস দেড়েক খেতে হবে। এর দ্বারা ঐ ক্লান্তি আর থাকবে না।
৩. শ্বাসে ও কাসে: যদি এদের শৈশবের ইতিহাসে শোনা যায় তাহলে বুঝা যাবে এরা ছোটবেলায় খুব ডিগডিগে চেহারার ছিলেন, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চেহারার পরিবর্তন হয়েছে। বটে, কিন্তু একটা সমস্যা তাঁদের শরীরে থেকে যায়নি, সেটা হচ্ছে অল্প ঠান্ডা লাগলে অথবা কোনো ঋতু পরিবর্তনের সময় তাঁদের সর্দি কাসি হবেই, তখনই বুঝতে হবে। শৈশবের অপুষ্টিই এই বিপাকে ফেলে দিয়েছে। এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা মূল চূর্ণ এক গ্রাম থেকে ২ গ্রাম মাত্রায় সকালে ও সন্ধ্যায় অল্প গরম জল সহ খেতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে এটা প্রত্যক্ষভাবে শ্বাস-কাসের ওষুধ নয়; যাঁর পূর্ব ইতিহাস এই ধরনের ছিল, তাঁর ক্ষেত্রেই কাজ করবে।
৪. ফোড়ায়: অনেকে এটাতে ভুগে থাকেন। অনেকে বলে থাকেন যে, রক্ত খারাপ হয়েছে, কিন্তু জেনে রাখা ভালো রক্ত দূষিত হলে আরও কঠিন রোগ আসে, যেমন কুষ্ঠ ও বাতরক্ত। কোনো কারণে রক্তবিকৃত হয়ে এই ফোড়া হয়, যদি এই বিকারকে সরিয়ে ফেলা যায় তাহলে ফোড়া আর হবে না, সেক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ এক থেকে দেড় গ্রাম মাত্রায় আধ কাপ গরম দুধের সঙ্গে সকালে ও বিকালে দুবার খেলে ঐ রক্তবিকারটা চলে যাবে, আর ফোড়াও হবে না। তবে প্রারম্ভিক মাত্রা কিন্তু এক গ্রামের বা ৭ থেকে ৮ রতির বেশি নয়।
৫. শ্বেতী রোগে: এই শ্বেতী কতো গভীরে প্রবেশ করেছে সেটা বোঝার উপায় হলো দাগগুলি দুধের মতো সাদা হয়ে গেলে বুঝতে হবে যে, এ রোগাক্রমণ মাংসবহ স্রোত পর্যন্ত হয়েছে; আর দাগগুলি একটু লালচে হলে বুঝতে হবে, এটা রক্তবহ স্রোতের এলাকায় আছে; আর যখন আবছা সাদা দাগ দেখা যাবে তখন বুঝতে হবে, এখন সে রসবহ স্রোতের এলাকায় আছে; আর অশ্বগন্ধার মূল তখনই কাজ করে যখন এই রোগ রসবহ ও রক্তবহ স্রোতের এলাকায় থাকে; এ অবস্থার ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ দেড় বা দুই গ্রাম মাত্রায় সকালে ও বিকালে দুবেলা দুধসহ খেতে হবে। আর কাঁচা অশ্বগন্ধার গাছের পাতা ও মূল একসঙ্গে ১০ গ্রাম নিয়ে একটু থেঁতো করে, ২ কাপ
৬. পায়ের ফুলোয়: প্রায়ই আমাশা হয়। আর এটা সেটা খেয়ে সাময়িক চাপা দেওয়া হচ্ছে, এর ফলে কিছুদিন বাদে আমরসের ফুলো পায়ে দেখা দিয়েছে, বুঝতে হবে এ আমরস রসবহ স্রোতকে দূষিত করেছে, এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ ১ গ্রাম মাত্রায় সকালে ও বিকালে থানকুনি
(Centella asiatica) পাতার রস ৪ চা চামচ একটু গরম করে সেই জলীয়াংশটার সঙ্গে খেতে হবে; অথবা শ্বেত পুনর্নবার
(Trianthema portulacastrum) রসও নেওয়া চলে। এই মুষ্টিযোগটি ব্যবহার করলে পায়ের ফুলোটা সেরে যাবে।
৭. ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে: এটার আয়ুর্বেদিক নাম তমক শ্বাস। এই রোগের উপসর্গ হলো রোগী কেসেই চলেছেন কিন্তু সর্দি ওঠার নামগন্ধ নেই। এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ এক বা দেড় গ্রাম মাত্রায় নিয়ে গাওয়া ঘি এক চা চামচ ও মধু আধ চা চামচ মিশিয়ে সকালের দিকে একবার ও বিকালের দিকে একবার একটু একটু করে চেটে খেতে হবে।
৮. দৈব ঔষধ: এই ক্রমিক ব্রঙ্কাইটিসে অনেকে ভেলকিবাজী দেখিয়ে থাকেন। এই অশ্বগন্ধার মূলকে অন্তর্ধূমে পুড়িয়ে ভাল করে গুড়িয়ে নিয়ে আধ গ্রাম মাত্রায় একটু মধু মিশিয়ে চেটে খেতে বলেন। পোড়া দেওয়ার নিয়ম হচ্ছে একটু ছোট মাটির হাঁড়ির মধ্যে মূলগুলোকে পুরে, মাটির সরা ঢাকা দিয়ে পুনরায় মাটি লেপে শুকিয়ে, ঘুঁটের আগুনে লঘুপুট দিতে হবে। আগুন নিভে গেলে ওটাকে বের করে ঐ পোড়া অশ্বগন্ধার মূলগুলোকে গুঁড়ো করে নিতে হবে।
৯. কার্শ্য রোগ: এ রোগটা শিশুদেরই বেশি দেখা যায়। এই রোগের কারণ হলো প্রথমে রসবহ স্রোত দূষিত হয়, ফলে যেটি সে খায়, সেটা থেকে তার পোষণ হয় না; তার পরিণতিতে রক্তমাংসও আর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় না।
অনেকের ধারণা, বাইরে থেকে কোনো স্নেহজাতীয় পদার্থ মালিশ করলে ওটার পুষ্টি হবে, আভ্যন্তরিক কোনো কিছু খাওয়ানোর প্রয়োজন নাই; এর ফলে আরও খারাপের দিকে যেতে থাকে, অর্থাৎ অস্থিক্ষয় হতে থাকে। এক্ষেত্রে তাকে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ আধ গ্রাম মাত্রায় দুইবার গরম দুধ ও চিনিসহ খেতে দিতে হয়। পরে শরীরে গঠন আরম্ভ হলে এটা এক গ্রাম পর্যন্তও দেওয়া যায়, কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ মাস খাওয়াতে হয়।
১০. বুক ঘড়ফড়ানিতে: হৃদযন্ত্রের কোনো দোষ যন্ত্রে ধরা পড়ে না, পিপাসা বেশি, পেটে বায়ু, একটু আধটু যে হয় না তা নয়, তবে এটা তো অনেকেরই হয় ; সেটা কিন্তু ঠিক কারণ নয়; আসলে রক্তবহ স্রোতের বিকার চলছে, তাই এটি অসুবিধা। এই ধরনের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ এক গ্রাম থেকে দেড় গ্রাম মাত্রায় দুই বেলা দুধসহ কয়েকদিন খেলে ওটা সেরে যাবে।
১. শিশুকালের কার্শ্য রোগ: যাকে
Emaciation বলে। এর কারণ হলো তার পুষ্টি, যেটা তার রসবহ স্রোত অথবা রক্তবহ স্রোতের স্বাভাবিক ক্রিয়াশীলতার অভাবেই হয়। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে ওষুধ খেয়ে আর পুষ্টিকর খাবার খেয়ে স্বাস্থ্য ভাল হয় ঠিকই, কিন্তু একটি জায়গায় সমস্যা থেকেই যায় তাহলো শক্তিবহ স্রোতের হীনবলত্ব তো থেকে যায়। যখনই সে বিবাহিত হলো তখনই তার ঐ হীনশুক্রর জন্য খুবই অসুবিধ হতে থাকবে; সেক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা মূল চূর্ণ দেড় গ্রাম মাত্রায় প্রতিদিন সকালে ও বিকালে আধা কাপ গরম দুধে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা ঐ শুক্রের অপুষ্টি সমস্যা চলে যাবে।
জলে সিদ্ধ করে সিকি কাপ বা তারও কম থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঐ জলটা সমস্ত দিনে ৩ থেকে ৪ বার দাগগুলিতে লাগিয়ে দিতে হবে। তবে ২ থেকে ৪ দিন খেয়ে বা লাগালে সেরে যাবে। যদি না সারে তাহলে এটা ছেড়ে দিলে চলবে না; কমপক্ষে ৩ মাস ব্যবহার করতে হবে। তবে এটা ঠিক, যে দাগ সাদা দুধের মতো হয়ে গিয়েছে আর ৩ বৎসর হয়ে গিয়েছে, সেটা সেরে যাওয়া অর্থাৎ দাগ মিলিয়ে যাওয়া নিতান্তই দুরূহ ব্যাপার।
বাহ্য প্রয়োগ
১১. শিশুদের দুধে শ্বাসে: অশ্বগন্ধা মূলের ক্বাথ করে, তেল মিশিয়ে বুকে পিঠে মালিশ করলে ওটা সেরে যাবে। মাত্রা নিতে হবে ৫ গ্রাম অশ্বগন্ধা মূল একটু থেঁতো করে এক কাপ জলে সিদ্ধ করে, ৩ থেকে ৪ চামচ থাকতে নামিয়ে, ছেঁকে ঐ ক্বাথটা ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম সরষের তেলের সঙ্গে মিশাতে হবে।
১২. ফোড়ায়: এ ফোড়া না পাকা না কাঁচা যাকে বলে দরকচা মেরে আছে, সেক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল বেটে একটু, গরম করে ফোড়ার উপর সকালে বিকালে ২ বার করে লাগালে ওটা পেকে ফেটে যাবে।
অশ্বগন্ধার রাসায়নিক উপাদান:
(a) Alkaloids. (b) Withanoliide, (c) Terpenoids.
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্রঃ
১. আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্রচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি‘ খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ১৬২-১৬৬।
If you're trying to lose fat then you certainly need to start using this totally brand new personalized keto meal plan.
ReplyDeleteTo design this service, licensed nutritionists, fitness couches, and professional cooks united to develop keto meal plans that are useful, painless, cost-efficient, and delicious.
From their first launch in 2019, 100's of clients have already remodeled their figure and well-being with the benefits a smart keto meal plan can give.
Speaking of benefits: in this link, you'll discover eight scientifically-proven ones given by the keto meal plan.